Hot Posts

6/recent/ticker-posts

সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের দরপত্রে বিদেশি কোম্পানির অনাগ্রহ।

                       পেট্রোবাংলা
 

বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলেও কোনো বিদেশি কোম্পানি শেষ পর্যন্ত অংশ নেয়নি। শুরুতে সাতটি বিদেশি কোম্পানি দরপত্রের নথি কিনেছিল। প্রতিযোগিতা বাড়াতে জমা দেওয়ার সময়সীমা আরও তিন মাস বাড়ানো হয়েছিল। তবে আজ সোমবার বেলা ১টায় সময়সীমা শেষ হলেও কোনো দরপত্র জমা পড়েনি।

এ পরিস্থিতিতে নতুন করে বিষয়টি পর্যালোচনা করার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা)। পেট্রোবাংলার তিনজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা Updated BD News24 কে জানিয়েছেন, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমে যাওয়ার কারণে বিদেশি কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগে আগ্রহ কমে যেতে পারে। চুক্তি অনুসারে গ্যাসের দাম কমার সম্ভাবনাও তাদের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে পারে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করার পরিকল্পনা রয়েছে।

সমুদ্রসীমা নির্ধারণের এক যুগ পেরিয়ে গেলেও বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস আবিষ্কারের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। চারটি বিদেশি কোম্পানি কার্যক্রম শুরু করলেও তিনটি ইতিমধ্যে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই কাজ ছেড়ে চলে গেছে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে আরেকটি কোম্পানিও চলে যেতে পারে।

গত ১০ মার্চ, ছয় মাস সময় দিয়ে দরপত্র আহ্বান করা হলেও সেপ্টেম্বরের মধ্যে সাড়া না পাওয়ায় সময়সীমা বাড়িয়ে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়। তবে শেষ পর্যন্ত কোনো বিদেশি কোম্পানিই দরপত্র জমা দেয়নি।

বিদেশি কোম্পানিকে আকৃষ্ট করতে পেট্রোবাংলা ২০২৩ সালের জন্য নতুন উৎপাদন অংশীদারি চুক্তি (পিএসসি) প্রণয়ন করে। এতে গ্যাসের দাম সরাসরি নির্ধারণ না করে জ্বালানি তেলের দামের ওপর ভিত্তি করে গণনা করা হয়। বর্তমানে তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৭০ থেকে ৭২ ডলার থাকায় গ্যাসের দাম ৭ থেকে ৭.২ ডলার নির্ধারণ হবে। তবে দরপত্র আহ্বানের সময় তেলের দাম ছিল ৯০ ডলারের বেশি।

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার জানান, কেউ দরপত্রে অংশ নেয়নি এবং অনাগ্রহের কারণও জানায়নি। এখন বিদেশি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং অভ্যন্তরীণভাবে বিশ্লেষণ করে নতুন করে পরিকল্পনা করা হবে।

পেট্রোবাংলার সূত্র জানায়, মার্কিন এক্সনমবিল, শেভরন, মালয়েশিয়ার পেট্রোনাস, নরওয়ে ও ফ্রান্সের যৌথ উদ্যোগ টিজিএস অ্যান্ড স্লামবার্জার, জাপানের ইনপেক্স ও জোগম্যাক, চীনের সিনুক, সিঙ্গাপুরের ক্রিস এনার্জি এবং ভারতের ওএনজিসি বিভিন্ন সময়ে আগ্রহ প্রকাশ করলেও শেষ পর্যন্ত কেউ দরপত্র জমা দেয়নি। এর আগে, শেভরন, এক্সনমবিল, ইনপেক্স, সিনুক এবং জোগম্যাক সমুদ্র জরিপের তথ্য কিনেছিল।

২০১২ এবং ২০১৪ সালে যথাক্রমে ভারতের ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারণের পর থেকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ২০১৯ সালে নতুন পিএসসি প্রণয়ন করা হলেও দরপত্র আহ্বান করা হয়নি। দীর্ঘ সময় পর ২০২৩ সালে এটি চূড়ান্ত করা হয়।

বঙ্গোপসাগরে গভীর সমুদ্রে ১৫টি এবং অগভীর সমুদ্রে ১১টি ব্লক রয়েছে। এর মধ্যে কনোকো ফিলিপস ২০১০ সালে দুটি ব্লকে কাজ শুরু করলেও গ্যাসের দাম বাড়ানোর দাবি মেটাতে না পেরে কাজ ছেড়ে দেয়। একইভাবে স্যান্তোস এবং পস্কো দাইয়ুও কাজ বন্ধ করে চলে যায়। বর্তমানে একমাত্র ভারতের ওএনজিসি অগভীর সমুদ্রের দুটি ব্লকে অনুসন্ধান চালাচ্ছে।

পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা জানান, এবারের দরপত্রে বিনিয়োগকারীদের জন্য আগের চেয়ে আরও সুবিধা রাখা হয়েছিল। গভীর সমুদ্রে ১৫টি এবং অগভীর সমুদ্রে ৯টি ব্লকের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলেও কোনো সাড়া না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

Post a Comment

0 Comments